এস এম তাজাম্মুল,মণিরামপুর প্রতিনিধি: ইন্টারনেটে এগিয়ে চলেছে গোটা বিশ্ব।বিগত বছর গুলোর তুলনায় ইন্টারনেটের ব্যাবহারও বেড়েছে ব্যাপক হারে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে পৃথিবীর প্রতিটি দেশের সমস্ত পর্যায়ের কার্যক্রমেই দিনে দিনে বাড়ছে ইন্টারনেটের সর্বাধিক ব্যাবহার।এই আধুনিক বিশ্বের সাথে ইন্টারনেট ব্যবহারে পিছিয়ে নেই কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের অবস্থান।
বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার পৌঁছে গেছে সরকারি প্রতিটি দপ্তর,বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যাবসা-বানিজ্য এমনকি কৃষকের কৃষিকাজ পর্যন্ত।
আবার ইন্টারনেটে বিভিন্ন বয়সী তরুন-তরুনী ভিন্ন ভিন্ন সাইডে কাজ করে করছে বেকারত্ব দূর।কেউ হয়ে উঠেছে স্বনির্ভর, আবার কেউ করছে বাড়ি গাড়ী,তৈরি হচ্ছে অনলাইন মার্কেটিংয়ে নবীন উদ্যক্তা,অনেকের জীবন হয়ে উঠেছে আলোকিত,উদ্যক্তারা বয়ে আনছে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও ব্যাক্তিজীবনে সাফল্য।
এমনিই একজন অনলাইন মার্কেটিংয়ে সফল উদ্যোক্তার নাম মোঃ আরিফুল ইসলাম রনি।নিজে সফল হয়ে বর্তমানে ২০জন নবীন উদ্যক্তাকে দিকনির্দেশনা ও পারিশ্রমিক দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন “ডিজিটাল আইটি সলিউশন এন্ড ইনস্টিটিউট” নামে একটি প্রতিষ্ঠান।
যশোর জেলার মণিরামপুর পৌরসভার তাহেরপুরের রাজগঞ্জ রোডে একটি ভবনের দ্বীতিয়তলায় আরিফুলের এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করে চলেছে ১৫জন তরুন-তরুনী অনলাইন মার্কেটিংয়ের নবীন উদ্যক্তা।এর আগে এখান থেকে ৫জন সফল অনলাইন উদ্যক্তা স্বাবলম্বী হয়েছে বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে আরিফুলের ডিজিটাল আইটি সলিউশন এন্ড ইনস্টিটিউটে গেলে দেখা যায়,রিসিভশন থেকে শুরু করে পরিচালকের রুম পর্যন্ত কম্পিউটারের কিবোর্ডের ঘটঘট শব্দ আর একক মনে কাজ করে চলেছে বিভিন্ন বয়সী তরুনীরা।ম্যাগাজিন,ই-কমার্স, ফেইসবুক মার্কেটিং সহ নানান সব ওয়েব সাইটে কাজ করে চলেছে কর্মরত সব তরুন-তরুনীরা।
বর্তমানে আরিফুলের প্রতিষ্ঠানে ১৫জন কর্মীর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মাসিক বেতন ১,২৫,০০০/-(এক লক্ষ পঁচিশ হাজার) ও অফিস খরচ মিলিয়ে মাসে ১,৫০,০০০/-(এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা বাদেও মাসিক আয় ২,০০,০০০(দুই লক্ষ) অধিক হয় বলে জানিয়েছেন “ডিজিটাল আইটি সলিউশন এন্ড ইনস্টিটিউটের” পরিচালক নিজেই।
উল্লেখ্য এই অনলাইন মার্কেটিংয়ের অর্জিত অর্থ থেকে কয়েক বছর যাবত প্রতিবছরের মুসলিম ধর্মের দুইটি ঈদে মণিরামপুরের বিভিন্ন গ্রামের কয়েক’শ অসহায় ও দুস্থদের মাঝে নগদ অর্থ ও পোশাক সামগ্রী বিতরন করে আসছেন ডিজিটাল আইটি সলিউশন এন্ড ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও সত্বাধীকারি মোঃ আরিফুল ইসলাম রনি।এ ছাড়াও কোথাও কোন গরীব-দুঃখীর অসহায়ত্বের খবর পেলে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে নিজেই ছুটে যান আরিফুল।
অনলাইনের কাজে ব্যাস্ত থাকা ডিজিটাল আইটি সলিউশন এন্ড ইনস্টিটিউটের তরুন মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন,আমি দীর্ঘদিন যাবত এখানে কাজ করছি।এর আগে আমি একটি কম্পিউটারের দোকানে কাজ করতাম।এখানে আমাদের পরিচালক নিজেই আমাদের তত্বাবধায়ন করেন।আগের চেয়ে সাইটের কাজের চাপ বাড়লেও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারি।নিজের বেকারত্ব দূর করার পাশাপাশি আমি আমার পরিবারের ভরনপোষণের অর্থ এখান থেকেই উপার্জন করতে পারি।আমিও এখান থেকে অনলাইনে কাজের মাধ্যমে একজন সফল উদ্যগক্তা হওয়ার আশা করি।
যে ভবনে প্রতিষ্ঠানটির অফিস ঐ ভবনের মালিকের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে প্রিন্স(ডাকনাম) জানান,আরিফুল ভাই ব্যাক্তি হিসাবে খুবই ভালো। উনি যখন আমাদের এখানে প্রথম অফিস নেন,তখন লোকবল কম থাকলেও এখন অনেকেই কাজ করছে।বর্তমান ইন্টারনেটের যুগে আরিফুল ভাইয়ের মতো অনলাইন উদ্যক্তা খুবই প্রয়োজন।বেকারত্ব দূরীকরনে অনলাইন একটি সময়োপযোগী প্লাটফর্ম।
সফল উদ্যক্তার গল্প শুনতে চাইলে “ডিজিটাল আইটি সলিউশন এন্ড ইনস্টিটিউটের” পরিচালক মোঃ আরিফুল ইসলাম রনি বলেন,আমি পড়াশোনার পাশাপাশি ছোটবেলা থেকেই নেটে আসক্ত থাকতাম।আমার বন্ধুরা যখন খেলাধুলায় সময় পার করতো তখন আমি ইন্টারনেটে বিভিন্ন গেমস খেলাতাম।সেই থেকেই অনলাইনের প্রতি আমার একটা আগ্রহ চলে আসে।২০১০ সাল থেকে আমার অনলাইনে কাজের শুরু।এরপর ২০১২ সাল থেকে গুগোল আর্টিকেল থেকে উৎসাহিত হয়ে ৫ ভোটের ভিতরে ২টি ভোট পেয়ে কানাডা,অস্ট্রেলিয়া, ইউএসএ সহ বিভিন্ন বাইরের রাষ্ট্রের সাথে অনলাইন মার্কেটিং শুরু করি।তখন রাত দিন নেটে সময় দিয়ে পরিশ্রম করে আমার কাজের সঠিক পারিশ্রমিক না পেয়ে হতাশায় পড়ে যায়।তবুও থেমে না থেকে আমি বিভিন্ন ওয়েব সাইড নিয়ে কাজ চলমান রাখি।
বর্তমানে আামার বাংলা ও ইংলিশ দুটি ভাষাতে ম্যাগাজিনের sompurna24.com ও bbcFly.com এবং ই-কমার্সের ebazar.org.com সহ ছোট বড় কয়েকটি ওয়েবসাইট নিয়ে ফেইসবুকে ইংলিশ,বাংলা লেটেলক্যাস্ট নিয়ে মার্কেটিংয়ে কাজ করছি।এ ছাড়াও বিভিন্ন ওয়েবসাইট,হালকা ও ভারী এ্যাপস তৈরি সহ সোস্যাল মিডিয়ায় ফেইসবুকে এ্যাড বিটের কাজ অনলাইনে করে থাকি।তিনি আরো বলেন,গত সাড়ে ৩বছরে ২০ জন বেকার তরুন-তরুনী আমার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়েছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে আরিফুল বলেন,আমার প্রধান চাওয়া আমার এই কার্যক্রমে উদ্ভুদ্ধ হয়ে হাজার হাজার বেকার তরুন-তরুনী অনলাইনে কাজ শুরু করুক।এতে করে সমাজে বেকারত্বের হার কমবে ও মাদক থেকে উঠতি বয়সী প্রজন্ম দূরে থাকবে।আমি এক সময় তাহেরপুরে ভাড়া বাড়িতে থাকতাম,এই প্রতিষ্ঠানের অর্জিত অর্থ দিয়ে আমি একটি বাড়ি করেছি,একটি চার চাকার গাড়িও কিনতে সক্ষম হয়েছি।আমার ইচ্ছা আছে ডিজিটাল আইটি সলিউশন এন্ড ইনস্টিটিউটের নিজস্ব জায়গায় একটি অফিস করার। আমার প্রতিষ্ঠানের দরজা সামাজিক যে কোন কাজের জন্য সকলের জন্য উন্মুক্ত।